উচ্চ ফলনশীল শস্য (High-yielding crops) এমন শস্য বা ফসলকে বলা হয়, যা উন্নত প্রযুক্তি, সঠিক ব্যবস্থাপনা, উপযুক্ত প্রজাতি, এবং উন্নত চাষাবাদ পদ্ধতির মাধ্যমে বেশি পরিমাণে উৎপাদন প্রদান করে। এই শস্যগুলি সাধারণত কৃষকের আয় বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
উচ্চ ফলনশীল শস্যের উদাহরণ:
- ধান (Rice):
- উচ্চ ফলনশীল প্রজাতি:
- স্বর্ণা (Swarna), হিরণমই (Hiramon), বিরাণী (BIRANI)।
- আধুনিক উন্নত জাত যেমন আইআর ৮৮, টিআর ২৯, অগ্রনী, সোনালী।
- আধুনিক ধান চাষের জন্য উন্নত জাত এবং সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করা প্রয়োজন, যেমন সঠিক সেচ ব্যবস্থাপনা এবং সার প্রয়োগ।
- উচ্চ ফলনশীল প্রজাতি:
- গম (Wheat):
- উচ্চ ফলনশীল প্রজাতি:
- মাধবী, বিজয়া, প্রেমী।
- গমের জন্য পুষ্টির যথাযথ প্রয়োগ, সেচ এবং শস্য ঘূর্ণন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- উচ্চ ফলনশীল প্রজাতি:
- ভুট্টা (Maize):
- উচ্চ ফলনশীল প্রজাতি:
- প্রধান, ফলেক, যান্ত্রিক, বিশাল।
- ভুট্টার জন্য সঠিক জলবায়ু, ভালো সার ও নিয়মিত সেচ প্রয়োজন।
- উচ্চ ফলনশীল প্রজাতি:
- পাট (Jute):
- উচ্চ ফলনশীল প্রজাতি:
- ডুরা, মাহেন্দ্র।
- পাটের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হলে উন্নত জাত, সেচ ব্যবস্থা এবং সঠিক সময়ে পাতা সংগ্রহ গুরুত্বপূর্ণ।
- উচ্চ ফলনশীল প্রজাতি:
- ডাল (Pulses):
- উচ্চ ফলনশীল প্রজাতি:
- মসুর, মুগ ডাল, তিল।
- সঠিক সার প্রয়োগ এবং রোগ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডালের ফলন বৃদ্ধি করা সম্ভব।
- উচ্চ ফলনশীল প্রজাতি:
- তেলবীজ (Oilseeds):
- উচ্চ ফলনশীল প্রজাতি:
- সরিষা, সূর্যমুখী, পেস্তা।
- তেলবীজ চাষে অল্প জায়গায় বেশি ফলন উৎপাদন সম্ভব এবং তা কৃষকের আয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
- উচ্চ ফলনশীল প্রজাতি:
- শাক-সবজি (Vegetables):
- উচ্চ ফলনশীল শাক-সবজি:
- টমেটো, শসা, কুমড়া, গাজর, পালং।
- শাক-সবজি চাষে দ্রুত ফলন এবং সঠিক সময়ে চাষের মাধ্যমে লাভ বৃদ্ধি করা যায়।
- উচ্চ ফলনশীল শাক-সবজি:
- আলু (Potato):
- উচ্চ ফলনশীল প্রজাতি:
- আলু ৩৩, শ্বেতবেগুনি, ডায়মন্ড।
- আলু উৎপাদনে সঠিক প্রযুক্তি, সেচ ব্যবস্থা, এবং সারের সঠিক ব্যবহার প্রয়োজন।
- উচ্চ ফলনশীল প্রজাতি:
উচ্চ ফলনশীল শস্য চাষের জন্য কিছু সাধারণ পরামর্শ:
- উন্নত প্রজাতি নির্বাচন: উচ্চ ফলনশীল প্রজাতি নির্বাচন করলে শস্যের উৎপাদন বাড়ানো যায়।
- সারের সঠিক ব্যবহার: শস্যের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করতে সারের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা উচিত।
- সঠিক সেচ ব্যবস্থা: সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও জলাবদ্ধতা রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
- রোগ ও পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ: বিভিন্ন শস্যের রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে সঠিক উপায়ে প্রতিকার নেওয়া।
- বীজ ও জমির প্রস্তুতি: উন্নত বীজ এবং জমির সঠিক প্রস্তুতি প্রয়োজন যাতে ফলন ভালো হয়।
এই শস্যগুলো চাষ করলে কৃষকরা তাদের আয়ের পরিমাণ বাড়াতে পারে এবং খাদ্য নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।