গবদি পশু ও পাখি সাধারণত এমন পশু ও পাখি যা তাদের বাহ্যিক গঠন, অভ্যাস বা ব্যবহারিক কারণে পরিচিত। তবে, “গবদি” শব্দটি বাংলাদেশের কিছু অঞ্চলে গবাদি পশু বা গৃহপালিত পশু হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর মানে দাঁড়ায় গবাদি প্রাণী বা পোষা পশু, যেগুলোর মাধ্যমে কৃষকরা দৈনন্দিন কাজ, দুধ বা মাংসের জন্য উপকারিতা পান। এছাড়া, “গবদি পাখি” শব্দের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের হাঁস-মুরগি, তিতির বা অন্য পাখির আভাস দেওয়া হতে পারে।
গবদি পশু:
গবদি পশুর মধ্যে গবাদি পশু, যেমন গরু, ভেড়া, ছাগল, ঘোড়া, ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। এগুলি মানুষের জন্য অর্থনৈতিক ও কৃষিকাজের উপকারে আসে।
- গরু (Cow):
- গবাদি পশু হিসেবে: গরু সাধারণত দুধ উৎপাদন, মাংস এবং খামারে অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হয়।
- উচ্চ ফলনশীল জাত: যেমন সিমেনথাল, হলস্টাইন, দেশি গরু।
- ভেড়া (Sheep):
- মাংস ও পশমের জন্য: ভেড়া সাধারণত মাংস এবং পশমের জন্য পালন করা হয়। বাংলাদেশে বেঙ্গলী ভেড়া এবং বাংলাদেশি বেলি ভেড়া জনপ্রিয়।
- ছাগল (Goat):
- দুধ ও মাংস: ছাগল পালন দুধ এবং মাংসের জন্য জনপ্রিয়। বিশেষ করে বাংলাদেশি ছাগল, Black Bengal Goat।
- ঘোড়া (Horse):
- যাত্রা ও কৃষিকাজ: ঘোড়া খুবই শক্তিশালী প্রাণী, যা প্রধানত পরিবহন এবং খামারবাড়ির কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়।
- হাঁস-মুরগি (Duck & Chicken):
- ডিম ও মাংস: হাঁস ও মুরগি মূলত ডিম ও মাংস উৎপাদনের জন্য খামারে পালন করা হয়।
- হাঁসের জাত: যেমন খাকি ক্যাম্পবেল, ভারতীয় হাঁস।
- মুরগির জাত: যেমন কককোলা, ব্রয়লার মুরগি।
- ডিম ও মাংস: হাঁস ও মুরগি মূলত ডিম ও মাংস উৎপাদনের জন্য খামারে পালন করা হয়।
গবদি পাখি:
গবদি পাখি বলতে এমন পাখি বোঝানো হতে পারে যেগুলি সাধারণত কৃষি খামারে পালন করা হয় অথবা গৃহপালিত। এসব পাখি খাদ্য সরবরাহের জন্য যেমন মুরগি, হাঁস, তিতির, এমনকি এক সময় কিছু স্থানীয় পাখি বিশেষভাবে পালিত হত।
- হাঁস (Duck):
- হাঁস গৃহপালিত পাখি হিসেবে জনপ্রিয়, যা ডিম এবং মাংস উৎপাদন করে।
- উচ্চ ফলনশীল হাঁস: খাকি ক্যাম্পবেল, ভারতীয় হাঁস।
- মুরগি (Chicken):
- মুরগি গৃহপালিত পাখি যা মাংস এবং ডিম উৎপাদনের জন্য পালন করা হয়।
- উচ্চ ফলনশীল মুরগি: ব্রয়লার, লেয়ার্স, দেশি মুরগি।
- তিতির (Quail):
- তিতির ছোট আকারের পাখি, যেগুলি মাংস এবং ডিমের জন্য খামারে পালিত হয়।
গবদি পশু ও পাখি পালনের সুবিধা:
- আয়ের উৎস: গবাদি পশু ও পাখি পালন কৃষক ও খামারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়ের উৎস।
- খাদ্য উৎপাদন: দুধ, মাংস, ডিম, এবং পশমের মাধ্যমে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা যায়।
- প্রাকৃতিক সার: পশুপালনের মাধ্যমে পাওয়া গবাদি পশুর মল ও বর্জ্য কৃষিতে সার হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
- অর্থনৈতিক সমর্থন: পোষা পশু ও পাখি খামারীকে বিভিন্ন উপকরণের (যেমন দুধ, মাংস, ডিম) মাধ্যমে সহায়তা করে।
গবদি পশু ও পাখি পালন একটি সমৃদ্ধ কৃষি চাষাবাদ পদ্ধতি হতে পারে, যা কৃষকদের জন্য আর্থিক সুবিধা ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।