আমন ধান

বাংলাদেশের ধানের প্রজাতির মধ্যে আমন, অঞ্চল ও উৎপাদনের পরিমাণ নির্বিশেষে শীর্ষে অবস্থান করছে। এই ধান বোনো এবং রোপা হয় ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারিতে। বাংলাদেশে নিম্নাঞ্চলে ফলানো বেশিরভাগ আমন ধানই ভাসমান জাতের, যার স্থানীয় নাম জলিধান বা অগ্রহায়ণী ধান । বাংলাদেশে এর প্রায় ২,০০০ কালটিভার (cultivar) বা জাত রয়েছে, এবং এশিয়া জুড়ে আছে ৬,০০০-এরও বেশি জাত। সবগুলোই অত্যন্ত আলোককাল-সংবেদী।

বাংলাদেশে ধানের জমি ও উৎপাদনের পরিমাণ (১৯৯৭-৯৮)
ধান ফসলএলাকা
(১০ লক্ষ হেক্টর হিসেবে)
মোট এলাকা
(শতাংশ)
উৎপাদন (ছাঁটা চাল)
(১০ লক্ষ মেট্রিকটন হিসাবে)
মোট উৎপাদনের শতাংশগড় উৎপাদন
(হেক্টরপ্রতি মেট্রিকটন)
আমন৫.৮১৫৬.৬৩৮.৮৫৪৬.৯২১.৫২
(উচ্চ ফলনশীল আমন)(২.৫৫)(২৪.৮৬)(৫.২১)(২৭.৬২)(২.০৪)
বার্ষিক প্রাপ্তব্য মোট ধান: ১৫২.৮ লক্ষ মেট্রিকটন; তথ্য-উৎস: BBS Monthly Statistical Bulletin, July 1998.[১]

আমন ধান বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধান প্রজাতি, যা সাধারণত বর্ষাকালে চাষ করা হয়। এটি মূলত বৃষ্টির পানিতে চাষ হওয়া ধান, যা আর্দ্রতা ও জলবায়ুর উপর নির্ভরশীল। আমন ধানের বৈশিষ্ট্য এবং চাষের সময়কাল নিম্নরূপ:

  1. চাষের সময়: সাধারণত আমন ধান চাষ করা হয় জুন-জুলাই মাসে এবং কাটা হয় নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে। এটি প্রধানত বর্ষাকালীন ধান, যা বাংলাদেশের প্রধান কৃষিপণ্য।
  2. বৈশিষ্ট্য: আমন ধান সাধারণত মাঝারি বা দীর্ঘ সময়ে পরিপক্ব হয় এবং এর বুনোট ভালো। এই ধানের শস্য ঘন, সুগন্ধি এবং খেতে সুস্বাদু হয়।
  3. চাষের স্থান: বাংলাদেশে আমন ধান চাষ সবচেয়ে বেশি হয় রংপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল, রাজশাহী, খুলনা, এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে।
  4. উৎপাদন: বাংলাদেশে আমন ধান উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং এটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক। আমন ধান দেশের মোট ধান উৎপাদনের বড় একটি অংশ গঠন করে।
  5. প্রযুক্তি ও উন্নয়ন: সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, আধুনিক প্রযুক্তি এবং উন্নত জাতের আমন ধান চাষে ব্যবহৃত হচ্ছে, যা উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষকদের জন্য লাভজনক হতে সাহায্য করছে।

এছাড়াও, আমন ধান বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কারণ এটি শুধু খাদ্য সরবরাহই করে না, বরং কৃষক পরিবারের আয়ের অন্যতম উৎস।