পাট

পাট (Jute) একটি প্রাকৃতিক আঁশ এবং এটি কৃষি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি প্রধানত বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল। পাট পরিবেশবান্ধব, সহজে পচনশীল এবং বস্ত্রশিল্প, কাগজশিল্প ও অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

পাটের সাধারণ তথ্য

বৈজ্ঞানিক নাম:
Corchorus capsularis (সাদা পাট)
Corchorus olitorius (তোষা পাট)
পরিবার: Malvaceae
উৎপত্তি: পাটের উৎপত্তিস্থল ভারত ও বাংলাদেশ।
প্রধান উৎপাদনকারী দেশ: বাংলাদেশ, ভারত, চীন, থাইল্যান্ড।
বাংলাদেশে পরিচিতি: পাটকে একসময় “সোনালি আঁশ” বলা হতো।

পুষ্টিগুণ:

পাটের পাতা খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এতে রয়েছে:

ভিটামিন এ: চোখের জন্য উপকারী।
ভিটামিন সি: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
আয়রন: রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: ত্বকের জন্য ভালো।

পাটের প্রকারভেদ:

সাদা পাট (Corchorus capsularis):
দীর্ঘ আঁশের জন্য পরিচিত।
তুলনামূলক মোটা এবং শক্তিশালী।
তোষা পাট (Corchorus olitorius):
মসৃণ এবং উন্নত মানের আঁশ।
বেশি দামি এবং বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক।

চাষাবাদ:

মাটি ও আবহাওয়া:
পলি মাটি এবং দোআঁশ মাটি পাট চাষের জন্য উপযুক্ত।
উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়া প্রয়োজন।
বপনের সময়:
সাধারণত মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে বীজ বপন করা হয়।
ফসল সংগ্রহ:
পাট চারা রোপণের ১০০-১২০ দিনের মধ্যে সংগ্রহ করা হয়।

পাটের ব্যবহার:

বস্ত্র ও শিল্প পণ্য:
পাটের বস্তা, ব্যাগ, দড়ি, মাদুর, চট ইত্যাদি তৈরি হয়।
কাগজশিল্প:
পাট থেকে উন্নতমানের কাগজ তৈরি করা হয়।
জ্বালানি ও সার:
পাটকাঠি জ্বালানি হিসেবে এবং জৈব সার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
জিওটেক্সটাইল:
পাট দিয়ে তৈরি জিওটেক্সটাইল মাটি ক্ষয়রোধে ব্যবহার করা হয়।

স্বাস্থ্য ও পরিবেশবান্ধব উপকারিতা

পাট পচনশীল: পরিবেশ দূষণ করে না।
কার্বন শোষণ: পাটগাছ বায়ুমণ্ডল থেকে প্রচুর পরিমাণ কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করে।
জৈবিক গুরুত্ব: পাটখড়ি মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে।