কলার রোগ

রোগের নাম – কৃমি রোগ (Worm Disease)

রোগের লক্ষন –

রোগের কারণ : কৃমি

ক্ষতির ধরণ : কৃমি শিকড়ে আক্রমণ করে ক্ষত করে। ক্ষত স্থান দিয়ে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক জীবাণু প্রবেশ করে শিকড় পচিয়ে ফেলে। শিকড় মাটি আঁকড়ে থাকার ক্ষমতা হারায়। আক্রান্ত গাছ সহজে পড়ে যায়।ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে : বাড়ন্ত পর্যায়

ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : শিকড় , গোঁড়া

সমন্বিত রোগ ব্যবস্থাপনা :

বছরে ৩-৪ বার জমিতে ফুরাডান ৫ জি বা বিস্টারেন ৫জি ৪৫-৬০ কেজি / হেক্টর প্রয়োগ করুন।

পূর্ব-প্রস্তুতি :২-৩ বছর শস্য পর্যায় অবলম্বন করা ও কলা চাষ একই জমিতে বার বার না করা। ১০-১২ মাসের জন্য কলার জমি পতিত রাখা।

অন্যান্য :আক্রান্ত চারার গোঁড়ায় কালো দাগ থাকলে তা চেঁছে তুলে ফেলা। আক্রান্ত চারার গোঁড়া গরম পানিতে ( ৫৫ ডিগ্রি সে. ) ২০ মিনিট ডুবিয়ে রাখা।

রোগের নাম -কান্ড পচা বা হার্ট রোগ –

রোগের লক্ষন-

রোগের কারণ : ব্যাকটেরিয়া

ক্ষতির ধরণ : কচি পাতায় আগা থেকে ক্রমে নিচের দিকে সম্পূর্ণ ভারাইল/ বুগুলি / মাঝ অংশ আক্রমণ করে । আক্রান্ত অংশ প্রথমে হলুদ, পরে কালো হয়ে পচে যায়। রোগের প্রধান লক্ষণ হল গাছের শীর্ষ পাতা কাল হয়ে পচে যায়।

ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে : চারা

ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : কাণ্ড , পাতা

সমন্বিত রোগ ব্যবস্থাপনা:

আক্রান্ত গাছ উঠিয়ে ধ্বংস করুন।

পূর্ব-প্রস্তুতি :আক্রান্ত বাগান থেকে চারা সংগ্রহ করবেন না। আক্রান্ত জমিতে কলা চাষ করবেন না। জমি বেশি স্যাঁত স্যাঁত রাখবেন না। যন্ত্রপাতি সংক্রমণমুক্ত রাখুন।

 

রোগের নাম : কলার সিগাটোকা রোগ

রোগের লক্ষন –

রোগের কারণ : ছত্রাক

ক্ষতির ধরণ : এ রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হল গাছের তৃতীয় ও চতুর্থ কচি পাতায় ছোট ছোট হলুদ দাগ পড়ে। দাগগুলো ধীরে ধীরে বড় হয় ও বাদামী ঝলসানো রঙ ধারণ করে।বেশি আক্রান্ত পাতা আগুনে ঝলসানো বা পোড়া মনে হয়। আক্রান্ত গাছের ফলন ১০-১৫% কম হয়।তীব্র আক্রমণে অনেক পাতা সম্পূর্ণ শুকিয়ে যায়।

ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে : বাড়ন্ত পর্যায়

ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : পাতা

কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমনঃ নোইন ২০ গ্রাম ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে) ১০দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করুন।

সমন্বিত রোগ ব্যবস্থাপনা:

পূর্ব-প্রস্তুতি :প্রতিরোধী জাত চাষ করুন। কলা সংগ্রহের পর পর পাতা পুড়িয়ে ফেলুন। সঠিক দুরুত্তে গাছ রোপণ করুন যেন সব গাছ পর্যাপ্ত আলো বাতাস পায়।

 

রোগের নাম : কলার গুচ্ছমাথা রোগ/ভাইরাস রোগ

রোগের লক্ষন –

রোগের কারণ : ভাইরাস

ক্ষতির ধরণ : কলা গাছের বৃদ্ধি হ্রাস পায় এবং পাতা গুচ্ছাকারে বের হয়। পাতা আকরে খাটো এবং উপরের দিকে খাড়া থাকে। কচি পাতার কিনারা উপরের দিকে বাকানো এবং হলুদ রংয়ের হয়। পাতার শিরার মধ্যে ঘন সবুজ দাগ পড়ে।

ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে : বাড়ন্ত পর্যায়

ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : পাতা


সমন্বিত রোগ ব্যবস্থাপনা:জাব পোকা এ রোগের বাহক, এ পোকা দমনে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক ( যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মি.লি. ( ২ মুখ ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে) ১০ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করুন।
পূর্ব-প্রস্তুতি :

আকান্ত গাছ দেখামাত্র গোড়াসহ তুলে পুড়ে বা পুঁতে ফেলুন।

রোগের নাম :কলার কিউকাম্বার মোজাইক ভাইরাস রোগ

রোগের লক্ষন –

রোগের কারণ : ভাইরাস

ক্ষতির ধরণ : পাতায় হলুদাভ সবুজ দাগের মিশ্রণ থাকে, ফলন ব্যাপকভাবে কমে যায়।

ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে : বাড়ন্ত পর্যায়

ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : পাতা

সমন্বিত রোগ ব্যবস্থাপনা:
জাব পোকা এ রোগের বাহক, এ পোকা দমনে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মি.লি. ( ২ মুখ ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে)  ১০ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করুন।

রোগের নাম :পানামা রোগ

রোগের লক্ষন –

রোগের কারণ : ছত্রাক

ক্ষতির ধরণ : প্রথমে বয়স্ক পাতার কিনারা হলুদ হয় এবং পরে কচি পাতাও হলুদ রং ধারণ করে। পরবর্তিতে পাতা বোটার কাছে ভেঙ্গে নিচের দিকে ঝুলে পড়ে এবং গাছ মারা যায়। কোন কোন সময় গাছ লম্বালম্বিভাবে ফেটেও যায়।
ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে : বাড়ন্ত পর্যায়ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : কাণ্ড , পাতা

আক্রান্ত গাছ গোড়া ও মাটিসহ উঠিয়ে পুড়িয়ে ফেলুন। আক্রান্ত ক্ষেতে ৩-৪ বছর কলা চাষ করবেন না ।


সমন্বিত রোগ ব্যবস্থাপনা


পূর্ব-প্রস্তুতি :
চারা লাগানোর পূর্বে গর্তে ১% ফরমালিন ও ৫০ ভাগ পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিন এবং ১০-১২ দিন পর চারা রোপণ করুন। বাগান পরিস্কার রাখুন। আক্রান্ত বাগান থেকে চারা সংগ্রহ করবেন না। আক্রান্ত জমিতে অন্তত ৪ বছর কলা চাষ করবেন না।