আলুর-কীটপতঙ্গ

কীটপতঙ্গ- আলুর জাব পোকা (Potato Aphid)

বিস্তারিত-

“জাব পোকার প্রজাতির মধ্যে মাইজাস পারসিকি নামক প্রজাতি ভাইরাস রোগ ছড়িয়ে বীজের মান নষ্ট করে।

1. পোকার রঙ সবুজ, তবে বাদামী বর্ণের জাব পোকাও দেখা যায়।
2. জাবপোকা জরায়ুর মধ্যে বাচ্চা ধারণ করে এবং প্রসব করে। একটি স্ত্রী জাবপোকা ২৬-১৩৩ টি নিম্ফ বা বাচ্চা জন্ম দিতে পাড়ে।
3. জাবপোকা সরাসরি ডগা ও পাতা থেকে রস চুষে খায়। এর পরে পাতা বিবর্ণ হয়ে ঢলে পড়ে বা বিকৃত হয়ে যায়।
4 .জাব পোকা আলু গাছের সরাসরি ক্ষতি ছাড়াও পরোক্ষভাবে বিভিন্ন ভাইরাস রোগ সৃষ্টিতে বাহক হিসাবে কাজ করে।
5. পোকার দেহের ভিতরের ভাইরাস কণিকা গাছের রস চুষার সময় লালা বা বংশ পরম্পরায় বাচ্চা প্রসব করলে সে বাচ্চাও ভাইরাস জীবাণু বহন করে। ”

ক্ষতির প্রকৃতি / সংক্রমণ-

“1. পূর্ণবয়স্ক জাব পোকা ও বাচ্চা উভয়ই ক্ষতি করে।
2. পোকা পাতা, কান্ড ও ডগা থেকে রস চুষে খায়।
3. আলুর বিভিন্ন ভাইরাস রোগ ছড়ায়।
পাতা কুঁকড়ে যায়, হলুদ বর্ণ ধারণ করে বা বিভিন্ন আকৃতির ও বর্ণের হতে পারে। ”

জৈবিক নিয়ন্ত্রণ-

“1. আগাম আলু চাষ।
2. আলুর জমির আশেপাশে সোনালী গোত্রভুক্ত (সরিষা) চাষ করা যাবে না। কারণ সরিষা ফুলে এরা আকৃষ্ট হয়।
3. সুষম সার ও সময় মত সেচ দিতে হবে।
4. প্রাকৃতিক শত্রু যেমনঃ লেডীবার্ড বিটল, বোলতা সংরক্ষণ করে জাব পোকার সংখ্যা কমিয়ে রাখা যায়। ”

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ-

“1. টিডো ২০ এস এল ৫ মি.লি. ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতক জমিতে ১০ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করুন।
2. অথবা টিডো প্লাস ৭০ ডব্লিউ ডি জি ২ গ্রাম প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতক জমিতে স্প্রে করতে হবে।
3. আক্রমণ বেশি হলে- পাইরাজিন ৭০ ডব্লিউ ডি জি ৪ গ্রাম প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতক জমিতে স্প্রে করতে হবে।
4. এছাড়া এই পোকার আক্রমণ প্রতিরোধ করতে আক্রমণের পূর্বে- থায়োসাইড ৭৫ ডব্লিউ ডি জি ১.৫ গ্রাম প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতক জমিতে স্প্রে করতে হবে। ”

কীটপতঙ্গ- আলুর জাব পোকা (Potato Aphid)

বিস্তারিত-

“1. কাটুই পোকা বেশ শক্তিশালী, ৪০-৫০ মিলিমিটার লম্বা।
2. পোকার উপর পিঠ কালচে বাদামী বর্ণের, পার্শ্বদেশ কালো রেখাযুক্ত এবং বর্ণ ধূসর সবুজ।
3. শরীর নরম ও তৈলাক্ত। ”

ক্ষতির প্রকৃতি / সংক্রমণ-

“1. রাতে চারার গোড়া কেটে ফেলে। চারা ঢলে পড়ে অথবা শুকিয়ে মারা যেতে পারে।
2. ডিম ফুটে বের হয়ে কীড়া পাতার বাইরের ত্বক অংশ খেয়ে থাকে। ”

জৈবিক নিয়ন্ত্রণ-

“1. সকাল বেলা আক্রান্ত চারার আশে পাশে মাটি খুরে পোকা বের করে মেরে ফেলা।
2. পাখি বসার জন্য ক্ষেতে ডালপালা পুঁতে দেয়া।
3. রাতের বেলায় ক্ষেতের মাঝে মাঝে আবর্জনা জড়ো করে রাখলে তার নিচে কীড়া এসে জমা হবে, সকালে সেগুলোকে মেরে ফেলা।
4. ক্ষেতের মাটি আলগা করে দেওয়া।
5. এ পোকা নিশাচর, রাতের বেলায় সক্রিয় থাকে তাই রাতে-রাতে টর্চ দিয়ে খুজে খুজে পোকা মেরে ফেলা।
6. ফিলিতে সঠিকভাবে মাটি তুলে দিতে হবে যাতে বর্ধনরত আলুর কন্দ দেখা না যায়। ”

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ-

“1. গোলা ৪৮ ই সি ৬৯ মিলি প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে।
2. অথবা ফাইটার ২.৫ ই সি ১৫ মিলি প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে।
3. অথবা কেয়ার ৫০ এস পি ৩০ গ্রাম প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে।
4. স্প্রে করার সময় মাটিসহ ভালভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে। ”

কীটপতঙ্গ- আলুর পাতা সুড়ঙ্গকারী পোকা (Leaf Miner)

বিস্তারিত-

“1. কাটুই পোকা বেশ শক্তিশালী, ৪০-৫০ মিলিমিটার লম্বা।
2. পোকার উপর পিঠ কালচে বাদামী বর্ণের, পার্শ্বদেশ কালো রেখাযুক্ত এবং বর্ণ ধূসর সবুজ।
3. শরীর নরম ও তৈলাক্ত। ”

ক্ষতির প্রকৃতি / সংক্রমণ-

“1. রাতে চারার গোড়া কেটে ফেলে। চারা ঢলে পড়ে অথবা শুকিয়ে মারা যেতে পারে।
2. ডিম ফুটে বের হয়ে কীড়া পাতার বাইরের ত্বক অংশ খেয়ে থাকে। ”

জৈবিক নিয়ন্ত্রণ-

“1. সকাল বেলা আক্রান্ত চারার আশে পাশে মাটি খুরে পোকা বের করে মেরে ফেলা।
2. পাখি বসার জন্য ক্ষেতে ডালপালা পুঁতে দেয়া।
3. রাতের বেলায় ক্ষেতের মাঝে মাঝে আবর্জনা জড়ো করে রাখলে তার নিচে কীড়া এসে জমা হবে, সকালে সেগুলোকে মেরে ফেলা।
4. ক্ষেতের মাটি আলগা করে দেওয়া।
এ পোকা নিশাচর, রাতের বেলায় সক্রিয় থাকে তাই রাতে-রাতে টর্চ দিয়ে খুজে খুজে পোকা মেরে ফেলা।
5. ফিলিতে সঠিকভাবে মাটি তুলে দিতে হবে যাতে বর্ধনরত আলুর কন্দ দেখা না যায়। ”

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ-

“1. গোলা ৪৮ ই সি ৬৯ মিলি প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে।
2. অথবা ফাইটার ২.৫ ই সি ১৫ মিলি প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে।
3.অথবা কেয়ার ৫০ এস পি ৩০ গ্রাম প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে।
4.স্প্রে করার সময় মাটিসহ ভালভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে। ”

কীটপতঙ্গ-আলুর ফ্রি বিটল (Potato Flea Beetle)

বিস্তারিত-

” ১. খুব ছোট হলুদাভ সাদা, নরম দেহ বিশিষ্ট। ২. আক্রমণের পর্যায় : বাড়ন্ত পর্যায়, চারা, পূর্ণ বয়স্ক
৩. ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : পাতা, কচি পাতা
৪. পোকার যেসব স্তর ক্ষতি করে : পূর্ণ বয়স্ক, নিম্ফ ”

ক্ষতির প্রকৃতি / সংক্রমণ-

“১. গাছের রস চুষে খাওয়ার ফলে গাছ শুকিয়ে যায়।
২. এই পোকা এক ধরণের রস ছড়িয়ে দেয়, যেখানে বিভিন্ন ছত্রাক আক্রমণ করে।
৩. ফলে দূর থেকে আক্রান্ত গাছকে নিস্তেজ ও কালো দেখায়।
৪ .গাছের বৃদ্ধি খুবই কম হয়।
৫. তাছাড়া এই পোকা মুগ ও মাসকলাইয়ে হলুদ মোজাইক ভাইরাস রোগ ছড়ায়। ”

জৈবিক নিয়ন্ত্রণ-

“১. আগের ফসলের নাড়া বা অবশিষ্ট অংশ ভালভাবে ধ্বংস করা।
২. আগাছা, মরা পাতা ও আবর্জনা পরিষ্কার করতে হবে।
৩. সাবানযুক্ত পানি স্প্রে করা যায় অথবা আধাভাঙ্গা নিমবীজের পানি (১ লিটার পানিতে ৫০ গ্রাম নিমবীজ ভেঙ্গে ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে ছেঁকে নিতে হবে) আক্রান্ত গাছে ১০ দিন পর পর ৩ বার স্প্রে করলে পোকা নিয়ন্ত্রন করা যায়।
৪. এছাড়াও তামাকের গুড়া (১০গ্রাম), সাবানের গুড়া (৫গ্রাম) ও নিমের পাতার রস প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়। ”

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ-

“১. টিডো ২০ এস এল ৫ মি.লি. ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতক জমিতে ১০ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করুন।
২. অথবা টিডো প্লাস ৭০ ডব্লিউ ডি জি ২ গ্রাম প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতক জমিতে স্প্রে করতে হবে।
৩. ১০ দিন পরপর ২/৩ বার স্প্রে করতে হবে।
৪. এছাড়া এই পোকার আক্রমণ প্রতিরোধ করতে আক্রমণের পূর্বে- থায়োসাইড ৭৫ ডব্লিউ ডি জি ১.৫ গ্রাম প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতক জমিতে স্প্রে করতে হবে। “